রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আহসান হাবীব, সুবর্ণচর নোয়াখালী :
নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার ৩নং চর ক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর এম এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দীন হেলাল এর বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ চারজন কর্মচারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলেছেন নিয়োগ প্রার্থীরা। অনেকেই টাকার মাধ্যমে এসব প্রশ্ন পেয়েছেন বলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম আজাদ জানান, ভুক্তভোগীদের আবেদনের পেক্ষিতে পরিচালনা কমিটি ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনার এবং প্রমানাদি দেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১১, ১২, ২০২৩ তারিখে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য এবং প্রমাদি দেখেন পরিচালনা কমিটি, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২৬.১২.২৩ ইং তারিখে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, একই সাথে উক্ত নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়ম কর্মে প্রধান শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি,অত্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন জানান, আমি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি থাকাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দীন হেলাল এর ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও অর্থ বানিজ্যের সত্যতা পাই, তার অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার অফিস কক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম এর নেতৃত্বে শালিসী বৈঠক বসে, বৈঠকে বিদ্যালয়ের কাগজপত্র পর্যালোচনায় ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়, শালিসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে ৯ লক্ষ টাকা জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা জমা না দিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দিয়ে কারসাজি করে গোপনে কমিটি ভেঙ্গে দেন। প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কবির আহাম্মদ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শামিম ইকবাল।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কবির আহাম্মদ মুঠোফোনে জানান, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক, নাছির উদ্দীন হেলাল বলেন, নিয়োগ বোর্ড যাদেরকে সুপারিশ করছে, পরিচালনা কমিটি সুপারিশ রাখতে ও পারে নাও রাখতে পারে, পরিচালনা কমিটি মনে করছে এদের নিয়োগ দিলে প্রাতিষ্ঠানিক বা একাডেমিক সমস্যা হতে পারে, এই কারণে তাদের নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে পরিচালনা কমিটি, অর্থ বানিজ্যের কথপোকথন রেকর্ডের বিষয় জানতে চাইলে কথাগুলো তার ছিলো বলে স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে নিয়োগ বঞ্চিতরা ও স্থানীয় সচেতন মহল উক্ত নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন ও অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবী করে বলেন, মানবসম্পদ সৃষ্টিতে শিক্ষার বিকল্প নেই এবং এ পর্যন্ত বিকল্প কোনো পন্থাও আবিষ্কৃত হয়নি। তাই শিক্ষা দাঁড়িয়ে আছে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে। একটি আধুনিক রাষ্ট্রে শিক্ষার কী ভূমিকা, তা অবশ্যই আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের কারণে যদি রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা শিক্ষা খাতে ধস নামে, তাহলে এটি জাতির জন্য বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেবে।